সুবর্ণদ্বীপের বানরনৃত্য

Featured Video Play Icon
জাকার্তা, সুকার্নো, ইয়োগইয়াকার্তা, সুহার্তো, জাভা, সুমাত্রা, গারুডা, মালয়, সিঙ্গাপুর — মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার এই নামগুলির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। আজ বলবো কি কারণে এই নামগুলো যথাক্রমে আসলে জয়কর্তা, সুকর্ণ, যোগ্যকর্তা, সু-অর্থ, যব, সমুদ্র, গরুড়, মলয়, সিংহপুর ইত্যাদি থেকে এসেছে।

লেখার সাথের ভিডিওতে দেখতে পাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী ‘কেচা’ নামক অনুষ্ঠান। অপার্থিব এই দৃশ্যটি নেয়া হয়েছে ‘বারাকা’ বলে ১৯৯২এ তৈরি তথ্যচিত্র থেকে। এটা ধারণ করা হয়েছে বালির গুনুং কাউয়ি বলে একাদশ শতাব্দীর এক মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের মাঝে।

বালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ট্যুরিস্টদের কাছে যেমন জনপ্রিয়, ঠিক ততটা মনকাড়া তাদের শিল্প-সংস্কৃতি — যার মধ্যে আছে ছায়ানাট্য, লেগংবারং নৃত্য, আর রামায়ণের নাট্যাভিনয়। রাবণের রাক্ষসবাহিনী বনাম হনুমানের বানরবাহিনীর যুদ্ধের প্রতীকী রি-এন্যাক্টমেন্ট এই কেচা  নামক ‘বানরনৃত্য’।

অংশগ্রহণকারীদের কানে গোঁজা জবাকুসুম — যেটা বাংলায় দুর্গাপূজায় ব্যবহৃত হয়। দৃশ্যটির গোঁড়ার দিকে দেখা যাচ্ছে বালির উলুওয়াতু মন্দিরের নিকটবর্তী অরণ্যের শাখামৃগদের, তারা সেখানকার পবিত্র রক্ষক। আর দেখানো হয়েছে জাভার বোরোবুদুর বৌদ্ধবিহার আর কম্বোডিয়ার আংকোর ভাটের বিষ্ণুমন্দিরের স্থাপত্য ও অলংকরণ। সেগুলি ভারতবর্ষের মন্দির-মসজিদগুলোর থেকে কোন অংশে কম নয়!

রামায়ণ আর হিন্দুধর্ম বালিসহ সারা ইন্দোনেশিয়াতে এসেছে প্রাচীন ভারতবর্ষ থেকে। ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ প্রায় দু’হাজার বছরের পুরনো।

ভিয়েতনামের ফুনানচম্পা, কম্বোডিয়ার চেনলাখ্মের, থাইল্যান্ডের দ্বারাবতী, মালয়েশিয়ার গঙ্গানগরলংকাসুকা, ইন্দোনেশিয়ার মজাপহিতশ্রীবিজয়াশৈলেন্দ্র, মায়ানমারের পাগান — অতীতের এ সকল রাজ্য সবাই কোন না কোনভাবে ভারতীয় সংস্কৃতির চর্চা করেছে। এদের অধিকাংশের নামই সে ইতিহাসের প্রত্যক্ষ স্বাক্ষ্য।

বিশেষ করে ভারতের দুটো অঞ্চল পূর্বদিকে হিন্দু-বৌদ্ধধর্ম, সংস্কৃত-পালি ভাষা, নাগরীলিপি, স্থাপত্যশৈলী, আর পরবর্তীতে ইসলাম, ইত্যাদির বিস্তারে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সে দুটো কোরোমান্ডেল উপকূল আর বঙ্গ। নালন্দার বৌদ্ধবিহারে ৮৬০ খ্রীষ্টাব্দে খচিত শিলালিপি থেকে আমরা জানতে পারি ‘সুবর্ণদ্বীপের’ — অর্থাৎ সুমাত্রার — শ্রীবিজয়া রাজ্যের শৈলেন্দ্রবংশীয় মহারাজা বলপুত্র কর্তৃক একটি মঠস্থাপনের জন্যে অনুদানের কথা। আর আমাদের বিক্রমপুরের বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে ধর্মপ্রচারে যাবার আগে সুবর্ণদ্বীপেই  শ্রীবিজয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় অধ্যয়ন করেন।

কি উপায়ে ভারতীয় সংস্কৃতি প্রথম পূর্ব এশিয়াতে এসে পৌঁচেছে, তার বিস্তারিত কোথাও লিপিবদ্ধ নেই। ধারণা করা যেতে পারে বাণিজ্যের খাতিরে শ’ শ’ বছর ধরে ধীরে ধীরে এখানকার স্থানীয় রাজ-রাজড়ারা — সাথে তাদের প্রজারা — ভারতবর্ষের বিজ্ঞান-শিল্পকলা-ধর্মচিন্তার ঐশ্বর্য দেখে তাতে আকৃষ্ট হয়। দক্ষিণ ভারতের তেলেগু পল্লব বংশের রাজারাও বিশেষ ভূমিকা পালন করে সমুদ্রের অপরপারে নতুন রাজ্য আর রাজবংশ স্থাপনে। এ ছিল কমবেশি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া।

ভারতীয় দখলদারিত্ব আর ঔপনিবেশিক শোষণের ইতিহাসও অবশ্য একটা সময়ে পাওয়া যায়। সেটা হলো একাদশ শতাব্দীতে তামিল চোলবংশের আগ্রাসনে শ্রীবিজয়া সাম্রাজ্যের পরাজয়, যাদের স্থান পরে পূরণ করে ত্রয়োদশ শতকের মজাপহিত বলে জবদ্বীপের — অর্থাৎ জাভার — আরেকটি রাজবংশ।

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের ঠিকানাও এ এলাকায় প্রাচীনতা থেকে পাওয়া যায়। সপ্তম-অষ্টম শতক থেকে তাদের বাণিজ্যপ্রধান সমুদ্রতীরবর্তী বন্দর-নগরগুলি ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ হতে শুরু করে। সুফী ধর্মপ্রচারকরা দ্বীপগুলির আরো গভীরাঞ্চলে ইসলামের বাণী নিয়ে যায়। তার উপরে ভারতে মুসলিম রাজত্ব প্রতিষ্ঠার পরে তাদের বনেদী বংশগুলির সাথে আত্মীয়তা করার জন্যে ইন্দোনেশিয়ার রাজারাও ধর্মান্তরিত হওয়া শুরু করে। তাছাড়াও আরবীর পরিবর্তে মালয় ভাষাতে ইসলামী পান্ডুলিপির প্রাচুর্য ছিল। এসব কারণে শীঘ্রই পুরো ইন্দোনেশিয়ার আশি শতাংশ মানুষ মুসলিম হয়ে যায়।

সেই ধারার ব্যতিক্রম শুধু বালি । বহুদিন ধরে তারা জাভা-সুমাত্রার মুসলিম রাজ্যগুলি থেকে স্বাধীন ছিল। আলাদা দ্বীপ হওয়ায় ধর্মপ্রচারকরাও সহজে সেখানে যেতে পারেনি। সেকারণে তারা আদিধর্ম বজিয়ে রেখেছে। তাদের রাজ্যগুলিকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে দখলে নেয় ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তি হল্যান্ড। বালিনিজ়দের উপর তাদের অত্যাচার দেখে বাকি ইউরোপীয় জাত তাদেরকে ছি-ছি করেছিল। সে কারণে তিরিশের দশকে অনেকটা ক্ষতিপূরণস্বরূপ ডাচরা বালির শিল্পসংস্কৃতিকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়া শুরু করে। কেচা-নৃত্যের উদ্ভব সে সময়।

এদের হিন্দুধর্মও ভারতের থেকে অনেক স্বতন্ত্র। পুরনো অ্যানিমিস্ট বিশ্বাসের মূল খুঁজতে বেশিদূর যাওয়া লাগে না। যেমন, কেচা আসলে সাংহিয়াং বলে বালির এক ভূততাড়ানি অনুষ্ঠানের আধুনিক রূপ। বৌদ্ধধর্মও পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায়নি। মজাপহিত রাজবংশের সময় শিব আর বুদ্ধ দু’য়েরই উপাসনা চলত একই মন্দিরে, এ ছিল তাদের অভাবনীয় ধর্মীয় সংস্কার আর সহনশীলতার প্রমাণ। ইসলামের বিস্তারের পরেও আগের অনেক আচারব্যবস্থা সুফী চিন্তার প্রভাবে রিডিফাইন-রিপারপাজ় হয়েছে। যেমন সুরো বলে নববর্ষের অনুষ্ঠান যুগ যুগ ধরে মুসলিম সমাজে জনপ্রিয়তাসহকারে পালিত হয়ে আসছে।

অবশ্য ১৯৯৮ সালে সুহার্তোর পতনের সময় থেকে মুসলিম-খ্রীষ্টান, মালয়-চীনা দাঙ্গা এখন নিত্যনৈমিত্তিক। নাইন-ইলেভেনের মত ভূরাজনৈতিক কারণে স্থানীয় কট্টরপন্থীদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা গিয়ে ইন্দোনেশীয়দের হাজার বছরের ধর্মীয় সহনশীলতা বিপন্ন। বালির হিন্দু জনগোষ্ঠী তাও বেঁচে গেছে দেশের কদর বাড়ানো আর ট্যুরিস্টদের টাকা উপার্জনের সামর্থের কারণে। সেটা কতদিন টেকে সেটা দেখবার বিষয়। অন্তত যতদিন ওয়াহহাবি মতবাদের সরকারগুলির অর্থায়ন থাকবে, ততদিন তাদের ভয় থেকেই যাবে।

‘ডিকেন্জিয়ান ডিস্টোপিয়া’

Featured Video Play Icon

আজকের গানটা ১৯৬৮ সালের ব্রিটিশ মিউজিক্যাল ‘অলিভার!’ থেকে। মনে হয় ৯২-৯৩এর দিকে এটা বিটিভিতে পরিবেশিত হয়েছিল। চার্লস ডিকেন্সের বিখ্যাত উপন্যাস ‘অলিভার টুইস্ট’ পড়ার আগেই এটা দেখেছিলাম। আর গানগুলির কথা না বুঝেই গল্পটা আর সুরগুলি খুব মনে ধরেছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে অনেক খুঁজে ডিভিডি সংগ্রহ করি।

এটা সেলেক্ট করার কারণ মোটামুটি একটা ধারণা দেয়া, ঊনবিংশ শতকের ইংল্যান্ডের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কেমনতর ছিল। ডিকেন্স এ কাহিনী লিখেন ১৮৩৭এ। রাণী ভিক্টোরিয়ার সিংহাসনে আরোহণের বছর সেটা। যুক্তরাজ্য সাম্রাজ্যের উচ্চতম শিখরে তখন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সূর্য কখনো অস্ত যায় না, কথাটা এই সময়েই চালু হয়; কারণ তাদের কোন না কোন উপনিবেশে যখন সূর্য অস্তগামী, অন্য কোনটাতে তখন সূর্যোদয়। ভারতে ১৮৫৭র সিপাহি বিদ্রোহের পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে সরিয়ে সম্রাজ্ঞী হিসাবে সরাসরি শাসনক্ষমতা হাতে তুলে নেন ভিক্টোরিয়া।

আমরা ভাবতে পারি যে এসময় ভারতসহ ব্রিটিশ কলোনিগুলিকে শোষণ করে ব্রিটেনের আপামর জনসাধারণ বিপুল সমৃদ্ধি ‌অর্জন করেছিল। বাস্তবতা এই সরল সত্যের থেকে জটিলতর! ভিক্টোরিয়ান যুগ যেমন ব্রিটিশ আভিজাত্যের নাক-উঁচু এটিকেটের জন্যে পরিচিত, ঠিক ততটা পরিচিত ‘ডিকেন্জ়িয়ান ডিস্টোপিয়া’ হিসাবে! ডিকেন্সের আবাসস্থল লন্ডনে তখন শিল্পবিপ্লবের হাওয়া লেগেছে। শহরের বায়ু ভারি, আকাশ কালো — কয়লা পুড়িয়ে ফ্যাক্টরি-রেল চালানোর ধোঁয়ায়।

সে শহরের নিম্নবিত্ত আর উঠতি মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন ছিল সেরকম নিম্নমানের। তাদের পোশাকআশাক ছেঁড়া, তাপ্পিমারা, ধূলিধূসরিত, বে-সাইজের। যাদের ভাগ্যে খাদ্য-পানীয় নিয়মিত জুটত, তাও ছিল অস্বাস্থ্যকর আর নোংরা। অনেকে থাকত পরিত্যক্ত বাড়িতে বস্তি করে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যারা অসুস্থ হয়ে পড়ত, তাদের ডাক্তার পাঠাত সমুদ্রতীরের বিশুদ্ধ বায়ু সেবনের জন্যে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনা আর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্লেগ-মহামারি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। সরকারি নিয়মকানুনও অতটা চটপটে হয়ে উঠেনি যে দ্রুত পতনমুখী জীবনযাত্রার মান আর উচ্চগামী আয়বৈষম্যকে আয়ত্তে আনবে।

এই দৃশ্যে দেখবেন এতিম অলিভার কপালের ফেরে ফেগিন নামে এক পকেটমার সর্দারের আস্তানায় এসে পড়েছে। ডিকেন্সের নিজের ছোটবেলার একটা ছায়া আছে অলিভারের মধ্যে। তাঁর ১২ বছর বয়সে তাঁর বাবাকে জেল খাটতে হয় অপরিশোধিত ঋণের কারণে। তখন পরিবারের ঘানি টানতে স্কুল ছেড়ে ফ্যাক্টরিতে কাজে যেতে হয় ডিকেন্সকে।

এই গানটিতে অলিভার ভাবছে ফেগিনদের লন্ড্রির ব্যবসা, কারণ একটা ধ্বংসপ্রায় বাড়িতে তাদের গোপন আখড়ায় অনেকগুলি সিল্কের রুমাল শুকাতে দেয়া হয়েছে। নিষ্পাপ-সরল অলিভারকে খেলাচ্ছলে ফেগিন আর তার বালক সাঙ্গপাঙ্গরা বুঝাচ্ছে কিভাবে পকেট কাটতে হয়। সে দৃশ্যে ফেগিন সেজেছে অভিজাত উচ্চবিত্ত ব্রিটিশ — কিছুটা কমিক তার সেই ভোল, কারণ উচ্চবিত্তের এটিকেট থাকলে কী হবে, সত্যিকার অর্থে তারাও ছিল লোভী-হিংসুক গোছের! অলিভারকে শিখাতে ফেগিনকে বোকা বানিয়ে আর্টফুল ডজার আর তার দোস্তরা সমানে মাল সরিয়ে চলেছে!

ডিকেন্স ছিলেন মানবচরিত্রের ভাল পর্যবেক্ষক, আর জটিল ক্যারিকেচার তৈরির বিশেষজ্ঞ। তাঁর কাহিনীগুলির কোন ক্যারেক্টারই সোজাসাপ্টা খারাপ বা ভাল ছিল না — সাদাও নয়, কালোও নয়, ধূসর। যেমন এই মুভির ফেগিন চরিত্রটা — সে লোভাতুর বটে, কিন্তু সে যে সেটা করছে পেটের দায়ে! বুড়ো বয়েসে তাকে দেখার কেউ নেই, এসব চিন্তায়। আর বালকবয়সী চামচাদের সে বাবা না হলেও গার্জেনের মত, আগলে রাখার মত কিছুটা দায়িত্ববোধ আছে।

ভিক্টোরিয়ান সমাজে এত শ্রেণীবিভেদ, এত অসমতা থাকা সত্ত্বেও সোশ্যাল মোবিলিটি ছিল। ডিকেন্সের ক্যারেক্টারগুলি কখনো কখনো সৌভাগ্যবানও হত। বাস্তবেও যারা সুযোগসন্ধানী ছিল, তারা খোদ ব্রিটেনে না পারলেও জাহাজের খালাসী হিসাবে আমেরিকায় পাড়ি দিয়ে, নয়ত ভারতে — যেখানে ভদ্রলোকে যেতে চাইত না — সেখানে সেনা-নৌ অফিসার হিসাবে গিয়ে রাতারাতি একটা কূলকিনারা করে ফেলতে পারত। তারপর বাড়ি ফিরে জমিজমা কিনে, ব্যবসা বানিয়ে ভবিষ্যতটা আরেকটু পাকাপোক্ত করে ফেলত।

শেষ করি একটা কন্ট্রাস্ট দেখিয়ে। সোশ্যালিজম-কম্যুনিজমের পিতৃদেব কার্ল মার্ক্সও ১৮৫০ থেকে ১৮৬০ অব্দি লন্ডনে ছিলেন। ডিকেন্জ়িয়ান ডিস্টোপিয়ার প্রতক্ষদর্শী তিনিও। তাঁর ১৮৬৭তে লেখা ‘ডাস কাপিটাল’এ ব্যাখ্যা করেছেন শ্রমিকশ্রেণীর ওপর পুঁজিবাদী শোষণের পদ্ধতি, আর সেই শ্রেণীবিষম সিস্টেম ভাঙার লক্ষ্যে প্রলেতারিয়ান বিপ্লবের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু সেই বিপ্লব ব্রিটেনে হয়নি। হয়েছিল শিল্পবিপ্লবে পিছিয়ে থাকা ইউরোপের সবচে’ কৃষিপ্রধান দেশ রাশিয়াতে, যেখানে তা হবারই কথা নয়, তাও আরো ৫০ বছর পরে। মার্ক্সের থিওরি নানা প্যাঁচঘোঁচ মেরে তৈরি হলেও অনেক ক্ষেত্রেই ‌অতিরিক্ত সিম্প্লিস্টিক ছিল, তাই ভুলও ছিল। হয়ত বৈষম্য নিয়ে অভিযোগ করে আর গলা হাঁকড়িয়ে নিম্নবিত্তগোষ্ঠীর ‘সায়েন্টিফিক প্রফেট’ হওয়াটাই ছিল তাঁর মূল উদ্দেশ্য!

সেখানে কিন্তু ডিকেন্স শুধু উপন্যাস-বই লিখেই দমে থাকেননি। রাজনীতিতে সরাসরি যোগ না দিয়েও লেখনী দিয়ে সংগ্রাম করেছেন। সিস্টেমের মধ্যে থেকেই সিস্টেমটার উৎকর্ষসাধন করেছেন। খাদ্য-পানীয় আর শিশুশ্রম সংক্রান্ত অনেক মানবিক আইন তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর অক্লান্ত অ্যাকটিভিজমের কারণেই হয়। অনেকগুলি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাতেও তিনি সহায়তা করেন। সেসব কর্মকান্ডের সুফল তাঁর পরবর্তীপ্রজন্ম এখনো ভোগ করছে। তাঁর ভাষায়, ‘দেয়ার ইজ় এ উইজ়ডম অফ দ্য হেড, অ্যান্ড… দেয়ার ইজ় এ উইজ়ডম অফ দ্য হার্ট!’ উচিত কথা!

(এখানে পাবেন গানটির কথা।)

close

ব্লগটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন!